পড়াশুনা কে আবিষ্কার করেছেন ? | Who invented education in bengali?
পড়াশুনা কে আবিষ্কার করেছেন ? আজকের এই নিবন্ধে আমরা আপনাদের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেব। বেশ কিছু দিন ধরে আমরা দেখছি যে আমাদের এই Education ওয়েবসাইট টি তে প্রচুর ছাত্র ছাত্রী প্রশ্ন করছেন যে “পড়াশুনা কে আবিষ্কার করেছেন ? ” এবং এই প্রশ্ন টা করা ও স্বাভাবিক । করান আমাদের সমস্ত বিশ্ব সংসার চলছে পড়াশুনার উপর নির্ভর করে। যাই যারাই এই পড়াশুনা কে নিয়ে কিছুটা চিন্তা করেন তারাই এই “পড়াশুনা কে আবিষ্কার করেছেন ? ” প্রশ্নটা নিয়ে গভীর ভাবে ভাবেন।
তবে বন্ধুরা আজকের এই নিবন্ধে আমরা এই ” পড়াশুনা কে আবিষ্কার করেছেন ? ” বিষয় নিয়ে আলোচনা করব, আপনারা যদি এই বিষয় নিয়ে শুনতে চান তবে এই নিবন্ধ শেষ পর্যন্ত পড়বেন । আমাদের বিশ্বাস আপনি আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
পড়াশুনা কে আবিষ্কার করেছেন ? | Who invented education in bengali?
বন্ধুরা এটা আপনারা সবাই অবশ্যই বিশ্বাস করেন যে শিক্ষা হল মানব উন্নয়ন ও অগ্রগতির মূল ভিত্তি , তাই শিক্ষা কে মানব জাতি যত তাড়াতাড়ি সমানের দিকে নিয়ে জেতে পারবে , তত তাড়াতাড়ি মানব জাতি তার অগ্রগতি আরও তাড়াতাড়ি করতে পারবে। আদিম যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ -এর শিক্ষা কে নিয়ে এক অনেক বড় ইতিহাস রয়েছে। আসল কথা বলতে কি প্রাচীন সভ্যতা থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত, শিক্ষার এই জয় যাত্রা মানুষের কৌতূহল এবং নতুন জিনিস সম্পর্কে জ্ঞান অন্বেষণে ও মানুষের জানার এক ভীষণ আকর্ষণ -এর জন্য সম্ভব হয়েছে।

শিক্ষা কাকে বলে ?
আপনি যদি শিক্ষার সংজ্ঞা জানতে চান তবে আপনাকে মানতে হবে যে শিক্ষা হল জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ এবং অভ্যাস অর্জনের একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া। এক আপনি এই বলতে পারেন যে শিক্ষা একটি চলমান এবং প্রচণ্ড গতিশীল একটি প্রক্রিয়া বা যাত্রা যা আমাদের এবং আমদের সমাজকে একটা আকার দেয়। শিক্ষা মানুষ বা যেকোনো জাতির বিবর্তন কে তরান্বিত করে।
শিক্ষার উৎসের গুরুত্ব
শিক্ষা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে তা জানার আগে আমাদের শিক্ষার উৎপত্তি ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ । এবং এটা মানুষ জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার শিকড় জানা আমাদের বিবর্তনের জন্য দায়ী। যদি মানুষ নতুন বা বিবর্তনের এর পেছনে না ছুটত তবে শিক্ষার কোন প্রয়োজন ছিল না। তাই নতুনত্ব কে স্থাপন করতে গিয়ে মানুষ আজকের আধুনিক শিক্ষাকে রূপ দিয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা কিভাবে তৈরি হয়েছিল
প্রাচীন কালে শিক্ষার প্রাথমিক স্তরগুলি বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতা জুড়ে মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে বিভিন্ন পদ্ধতির দ্বারা শুরু করা চেষ্টা করেছিল। এই সিস্টেমগুলি আমাদের আজকের কাঠামোগত শিক্ষাগত কাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করেছে। এখন আমরা জেনে নেব প্রাচীন সভ্যতা এবং তার সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা স্তরগুলি কি কি ছিল তার কিছু উদাহরণ ।
বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতা এবং প্রাথমিক শিক্ষা
মেসোপটেমিয়া প্রাচীন সভ্যতা এবং প্রাথমিক শিক্ষা :
মেসোপটেমিয়া প্রাচীন সভ্যতা কে অনেক ইতিহাসবিদ সভ্যতার দোলনা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এই মেসোপটেমিয়া প্রাচীন সভ্যতা প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। মেসোপটেমিয়া অধিবাসিরা বিশ্বকে শিক্ষা ব্যবস্থার নতুন রুপ দিয়েছিল। এর অধিবাসিদের বলা হত সুমেরীয় , এই সুমেরীয় তাদের কিউনিফর্ম লিখন পদ্ধতির সাহায্যে তাদের অর্জিত জ্ঞানকে সংরক্ষিত করে রেখেছিল এবং এর প্রচারের সূচনা করেছিল।
ইজিপ্ট প্রাচীন সভ্যতা এবং প্রাথমিক শিক্ষা
ইজিপ্ট প্রাচীন সভ্যতা এবং প্রাথমিক শিক্ষা কে হায়ারোগ্লিফিকস এবং উইজডম শিক্ষা নামে ইতিহাসবিদরা বলে গেছেন।
প্রাচীন মিশরে, এই শিক্ষা হায়ারোগ্লিফিক্স এর মাধ্যমে জ্ঞান প্রদানকে করা হত । পুরোহিত এবং লেখকরা এই শিক্ষা ব্যবস্থার মূল চাবিকাঠি ধরে রেখেছিলেন। এটি মিশরে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে দিয়ে আরও বিস্তারিত হয়।
গ্রীস প্রাচীন সভ্যতা এবং প্রাথমিক শিক্ষা
প্রাচীন গ্রীকরা শিক্ষাকে একটি দার্শনিক চিন্তাধারায় নিয়ে জেতে চেয়েছিল, তারা শিক্ষা কে দার্শনিক ভাবনায় সাধনার মাধ্যমে উন্নীত করতে চেয়েছিল। আমরা ইতিহাসে অনেক গ্রিক দার্শনিকের খোজ ও পাই যারা শিক্ষার উন্নতির জন্য অনেক কষ্ট করেছেন । যেমন সক্রেটিস, প্লেটো এবং অ্যারিস্টটল । এদের মতো বিখ্যাত দার্শনিকদের জন্য গ্রীক শিক্ষা কেন্দ্রগুলি দার্শনিক আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
মধ্যযুগীয় মঠ ধর্মী সন্ন্যাস শিক্ষা
মধ্যযুগীয় শিক্ষা কে অনেকে অন্ধকার যুগ এবং সীমিত শিক্ষা হিসাবে ব্যাখ্যা দেন। এই সময় মধ্যযুগে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এবং এই যুগকে অন্ধকার যুগ নামে ও বলা হয়। শিক্ষা ব্যবস্থা ভীষণ রকম ভাবে সীমিত হয়ে পড়ে, এবং এই সময় প্রাথমিকভাবে মঠ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলিতেই যা শিক্ষা ব্যবস্থা সীমাবদ্ধ ছিল।
জ্ঞান সংরক্ষণে মঠের ভূমিকা
চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, মঠগুলি জ্ঞান সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সন্ন্যাসীরা অধ্যবসায় সহকারে প্রাচীন গ্রন্থগুলি অনুলিপি এবং প্রতিলিপি করতেন, শেখার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতেন।
আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা বা রেনেসাঁ যুগ কি ?
রেনেসাঁ -এর যুগে নতুন ভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন হয়।এবং এই যুগে মানুষ নিজদের শিক্ষাকে হাতিয়ার করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য এবং সমালোচনামূলক চিন্তার উপর জোর আধুনিক শিক্ষার ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
ছাপাখানা – শিক্ষার প্রাধান হাতিয়ার
ছাপাখানা কে ইতিহাসবিদরা শিক্ষার একটি বিপ্লবী হাতিয়ার বলে বর্ণনা করে থাকেন। এবং এর পরেই শিক্ষার আমুল পরিবর্তন ঘটে যায়।
15 শতকের সময়, জোহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা ছাপাখানার তৈরি হয় এবং শিক্ষায় বিপ্লব ঘটে যায়। বইগুলি আরও সহজলভ্য হয়ে ওঠে, ব্যাপক সাক্ষরতা বৃদ্ধি পায় ।
শিক্ষা এর পর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়
17 এবং 18 শতকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকীকরণের সাক্ষী। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা কাঠামোগত শিক্ষা ব্যবস্থার মঞ্চ তৈরি করেছিল।
উপসংহার
উপসংহারে, আমরা বলতে পারে শিক্ষার উদ্ভাবন কোন বিশেষ ব্যাক্তি বা গোষ্ঠী দ্বারা হয়নি। এটি কে আপনি এভাবে বলতে পারেন যে , এটি একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা, এবং এই প্রচেস্টার মাধ্যমে বহু শতাব্দী ধরে ধীরে ধীরে এক রুপে পরিণত হয়। প্রাচীন সভ্যতার জ্ঞান থেকে আজকের এই নতুন আধুনিক যুগের শিক্ষা । প্রতিটি যুগেই কিছু না কিছু আবর্তন এবং বিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার সমৃদ্ধ করে গেছে।
বন্ধুরা তোমারা আমাদের Whatsapp গ্রুপে অবশ্যই যুক্ত হয়ে যাবে , Whatsapp গ্রুপে যুক্ত হওয়ার জন্য ডান দিকের "Join WhatsApp Group" ক্লিক করতে হবে। এই গ্রুপে আমরা নিয়মিত প্রশ্ন উত্তর দিতে থাকব।